শিরোনাম পড়ে যারা আমায় বকবকি করার জন্য শব্দ বাঁধছেন তাদের বলি, আগে সবটা পড়ুন তারপর না হয় বকাবকি করবেন। বাঙালীর বারোমাসে তেরো পার্বণ লেগেই থাকে। আর উৎসব মানেই অতিথিদের আগমন। তাই নিজের হাতের বানানো মিষ্টি, নাড়ু, নিমকি, চানাচুর খাওয়ানোর আনন্দটাই আলাদা। আজকাল রেডিমেড পাওয়া যায়। এত ঝামেলা ঝক্কি অনেকেই সময়ের অভাবে এড়িয়ে যান। কিন্তু অনেকেই আবার সময় করে খুশি মনে বানিয়ে ফেলেন এসব। আমিও বানাচ্ছি, তাই যদি কেউ বানাতে চান সেইজন্যই লেখা শেয়ার করছি। খুব সহজেই লেখা পড়ে স্পেশাল চানাচুর বানিয়ে ফেলতে পারেন আপনারাও। বাকিটা ব্যাক্তিগত পছন্দ।
ক. স্পেশাল চানাচুর বানানোর উপকরণঃ
- বেসন – এক কাপ (কাঠির জন্য)
- বেসন – এক কাপ (বোঁদের জন্য)
- চিঁড়া বা পোহা- ১ কাপ
- চিনাবাদাম – এক কাপ
- ছোলার ডাল- এক কাপ
- সবুজ মটর – এক কাপ
- তেল – দুই চা চামচ
- তেল ভাজার পরিমাপ মত
- বেকিং সোডা – এক চিমটি
- গোলমরিচ – 1১চা চামচ
- দারুচিনি – ১ ইঞ্চি টুকরা
- এলাচ – ২টি
- জিরা – এক চা চামচ গোটা রোস্ট করা
- লাল লঙ্কার গুঁড়ো – ১ চা চামচ
- লবণ- স্বাদ অনুযায়ী
- কিসমিস – ২ চামচ
- কারিপাতা – এক কাপ
খ. স্পেশাল চানাচুর বানানোর পদ্ধতি স্টেপ বাই স্টেপঃ
১. প্রথম ধাপঃ
একটি পাত্রে এক কাপ বেসন নিন। এবার এতে এক চা চামচ তেল, সামান্য লবণ দিন। এক চিমটি বেকিং সোডা যোগ করে বেসন মেশান। এবার অল্প অল্প করে জল দিন এবং একটি মসৃণ ব্যাটার তৈরি করুন। এই পরিমাণ দ্রবণ প্রস্তুত করতে কাপের চেয়ে সামান্য বেশি জল ব্যবহার করতে হবে। কড়াইতে তেল দিয়ে গ্যাসে গরম হতে দিন। কিছুক্ষণ পর তেলে কয়েক ফোঁটা ব্যাটার যোগ করে দেখুন তেল গরম হয়েছে কি না। বোঁদে যদি সাথে সাথে উপরে ভেসে যায় তবে তেল যথেষ্ট গরম। এবার কড়াইয়ের ওপর একটি ছিদ্রওয়ালা গোল হাতা ধরে তার ওপর দিয়ে বেসন ঢেলে দিন। বোঁদের আকার আপনা আপনি তেলে ফুটে আসবে। ভাজা হলে একটি চালুনিতে তুলে প্লেটে রাখুন যাতে প্লেটে থাকা বোঁদে থেকে অতিরিক্ত তেল বেরিয়ে আসে।
২. দ্বিতীয় ধাপঃ
কাঠি তৈরি করতে, একটি আলাদা পাত্রে এক কাপ বেসন নিন। ১ চা চামচ তেল এবং সামান্য লবণ দিন। এবার এতে সামান্য জল দিয়ে ব্যাটার তৈরি করুন। এটা তৈরিতে বড় ৩ টেবিল চামচ জল ব্যবহার করা হয়েছে। গরম তেলে সোনালি বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। কাঠি ভালো করে ভাজা হয়ে গেলে রেডি। একটি চালুনিতে তুলে প্লেটে রাখুন যাতে প্লেটে থাকা কাঠি থেকে অতিরিক্ত তেল বেরিয়ে আসে।
৩. তৃতীয় ধাপঃ
ভেজানো ছোলার ডাল একটি চালুনিতে রেখে একটি কড়াইতে তেল দিয়ে ডালটি সোনালি বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। ডাল সোনালি বাদামী হয়ে ভাজা হলে তেল থেকে চালনিতে বের করে প্লেটে রাখুন।
একটি চালুনিতে সেদ্ধ করা সবুজ মটর দিয়ে কড়াইতে তেল দিয়ে সোনালি বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। মটর গোল্ডেন ব্রাউন হয়ে এলে তেল থেকে চালনিতে বের করে প্লেটে রাখুন।
৪. চতুর্থ ধাপঃ
একটি চালুনিতে চিনাবাদাম রাখুন এবং তেলের প্যানে রেখে সোনালি বাদামী হওয়া পর্যন্ত ভাজুন। চিনাবাদাম সোনালি বাদামী হয়ে ভাজা হলে তেল থেকে চালনি থেকে নামিয়ে প্লেটে রাখুন। চিঁড়েও এই একই ভাবে ভেজে রাখুন।
চালুনিতে কারিপাতা দিয়ে কড়াইতে তেল দিয়ে ভাজুন। কারিপাতা ভাজার জন্য তেল মাঝারি গরম হতে হবে এবং আঁচও মাঝারি রাখতে হবে। কারিপাতা ভাজা হয়ে গেলে তেল থেকে চালনি বের করে প্লেটে রাখুন।
৫. পঞ্চম ধাপঃ
মশলা তৈরি করতে একটি মিক্সার জার নিন, তাতে দারুচিনির টুকরো, এলাচ, গোলমরিচ, এক চা চামচ লবণ, জিরা এবং লাল লঙ্কার গুঁড়ো দিন। সমস্ত জিনিস খুব সূক্ষ্মভাবে পিষে নিন। একটি পাত্রে মশলাগুলো নামিয়ে নিন। একটি বড় পাত্রে সব ভেজে রাখা উপকরণ ঢেলে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এবার এতে ৩ চামচ বানানো মসলা দিয়ে ভালো করে মিশিয়ে নিন। এরপর কিসমিস ও কারিপাতা দিন। চানাচুরের মসলার পরিমান নিজের পছন্দ মত কমবেশি করতে পারেন চাইলে।
প্রস্তুত সুস্বাদু স্পেশাল চানাচুর । এটা সম্পূর্ণ ঠাণ্ডা হয়ে গেলে, আপনি এটিকে যেকোনো এয়ার টাইট পাত্রে সংরক্ষণ করতে পারেন। এভাবে বানিয়ে ২-৩ মাস সংরক্ষণ করে খেতে পারেন।