skip to content
CurryNaari
Welcome to Nandini’s world of cooking & more...

রান্না করার সময় এই ৫টি ভালো অভ্যাস বজায় রাখুন

সবজি টোস্ট করছে সেফ

রান্না করা একটি শিল্প। খুশি মনে ভালো ভাবে আলু সেদ্ধ বানালেও তা খেতে লাগে অমৃতের মত। তাছাড়া রান্না করার সময় কিছু ভালো অভ্যাস প্রত্যেকের বজায় রাখা উচিত। এতে শুধু খাবারের স্বাদ বাড়ে তা নয় সাথে সাথে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাসও বাড়ে।

হাত ধোয়া, পরিষ্কার কাপড় পড়ে রান্না করার পাশাপাশি এই ৫টি অভ্যাস মাথায় রাখুন। সংখ্যা শুনে ঘাবড়াবেন না। খুবই ছোট ছোট বিষয়। যা অনেকেই এড়িয়ে যান। কিন্তু খেয়াল রাখলে গোটা পরিবারের জন্য তা ভালো।

১. রান্নার তেল পুনরায় ব্যবহার করাঃ

সত্যি করে বলুন তো কে কে এই কাজটা করেন না? আমরা সবাই কমবেশি রান্না করা তেল দ্বিতীয়বার ব্যবহার করে থাকি। ভারতীয় রান্না রান্নার তেল ছাড়া অপরিহার্য। সঠিক অনুপাতে এবং সঠিক পদ্ধতিতে তেলের ব্যবহার প্রায়শই কোনও স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে না। যদিও অনেক লোক নিয়মিত এই অভ্যাসটি অনুসরণ করেন, কিন্তু খুব কম লোকই পুনর্ব্যবহৃত রান্নার তেলের বিপজ্জনক প্রভাবগুলি সম্পর্কে অবগত। অর্থাৎ ব্যবহৃত তেল পুনরায় গরম করা যে ক্ষতিকর তা বেশির ভাগ মানুষের অজানা।

তেল পুনরায় ব্যবহারের ফলে তেলের রাসায়নিক সংমিশ্রণে পরিবর্তন ঘটে যা উচ্চ চার্জযুক্ত ফ্রি র‍্যাডিকেল বা আনচার্জড অণু তৈরি করে। এই মু র‍্যাডিকেলগুলি স্বাস্থ্যকর কোষগুলির সাথে নিজেদেরকে সংযুক্ত করে যার ফলে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বৃদ্ধি পায় এবং ধমনীগুলিও ব্লক হতে থাকে ধীরে ধীরে।

রান্না করার সময় যতটুকু তেলের প্রয়োজন ততটাই ব্যবহার করার অভ্যাস করুন। তেল মেপে দেওয়ার চামচ কিনে এনে রাখুন। এক টেবিল চামচ বা হাফ কাপ যে রান্নার ক্ষেত্রে যতটা প্রয়োজন ততটাই দিন। তেল রান্নার পড়ে এক্সটা হয়ে গেলে তা ব্যবহার না করাই ভালো। দু থেকে তিনবার এই তেল ফেলে দিন দেখবেন পরের বার থেকে একদম মাপে মাপে তেল ব্যবহার করছেন। তেল ফেলে দেওয়ার ভয়ে মাপের ভুল হবে না। এই অভ্যাস রপ্ত করুন।

২. নন-স্টিক প্যান কম তাপমাত্রায় ব্যবহার করার অভ্যাস করুনঃ

প্রায় প্রত্যেকেরই একটি নন-স্টিক টেফলন-কোটেড প্যান থাকে। তবে উচ্চ তাপমাত্রায় এতে রান্না করার অভ্যাস বন্ধ করুন। কারন এর ফলে “টেফলন ফ্লু” হতে পারে। এই অসুখটি ফ্লু-এর মতো উপসর্গ রয়েছে। যেমন- মাথাব্যথা, ঠাণ্ডা লাগা, পিঠে ব্যথা এবং 100°F থেকে 104°F এর মধ্যে তাপমাত্রার দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। উচ্চ তাপমাত্রার কারণে নন-স্টিক লাইনিং ধোঁয়া আকারে পিএফসি (পারফ্লুরোকার্বন) নির্গত করে। পিএফসি লিভারের ক্ষতি এবং বিকাশজনিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

এছাড়াও, এই নন-স্টিক পদার্থ তৈরিতে ব্যবহৃত রাসায়নিকগুলির মধ্যে রয়েছে অ্যামোনিয়াম পারফ্লুরোওক্যানোয়েট যা ক্যান্সার, অঙ্গের ক্ষতি এবং অন্যান্য নেতিবাচক স্বাস্থ্যের প্রভাব (প্রাণী অধ্যয়ন) এর সাথে যুক্ত।

তাই নন-স্টিক প্যানে রান্না করলে কম তাপমাত্রায় রান্না করার অভ্যাস করুন। যেসব খাবার বানাতে উচ্চ তাপমাত্রায় প্রয়োজন নেই তা এতে বানান। কম সময় লাগে যে খাবার বানাতে তা নন-স্টিক প্যানে বানানোর অভ্যাস করুন। বাকি রান্নার জন্য অন্য পাত্র ব্যবহার করুন।

৩. শাকসবজি এবং ফল পরিষ্কার করাঃ

শাক সবজি এবং ফল পরিষ্কার আমরা সবাই করি রান্নার আগে বা খাওয়ার আগে। কিন্তু তা সঠিক ভাবে পরিষ্কার করার অভ্যাস কতজনের আছে। খোলা কলের নিচে রেখে ভালো করে ধুয়ে নিলেই তা সঠিক ভাবে পরিষ্কার করা হয় না। বিশেষ শাক সবজি পরিষ্কার করার সঠিক নিয়ম আছে। তা মেনে করা উচিত।

এগুলিকে ১০% সাদা ভিনেগার ও ৯০% জলের দ্রবণে ১৫-২০ মিনিটের জন্য ভিজিয়ে রাখুন। এই দ্রবণে ভিজিয়ে রাখলে ও তারপর ঠাণ্ডা জলে ধুয়ে ফেললে বেশিরভাগ কীটনাশক, রাসায়নিক পদার্থের পাশাপাশি পৃষ্ঠে উপস্থিত ময়লা সহজে দূর হয়ে যায়। শাক সবজি এবং ফল পরিষ্কার করার জন্য কিছু সময় বিনিয়োগ করা সার্থক হবে এভাবে করলে। এই অভ্যাস নিজের ও নিজের পরিবারের জন্য প্রত্যেকের রপ্ত করা উচিত। এতে আপনার খাবারে থাকা বিষাক্ত পদার্থের একটি বড় অংশ দূর হয়ে যাবে।

৪. গরম খাবার প্যাক করতে অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করা বন্ধ করুনঃ

বাচ্চাদের টিফিন বা অফিসের টিফিন গরম রাখার জন্য আজকাল অনেকেই অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল ব্যবহার করন। তাছাড়া নানা রকমের খাবার বানানোর ক্ষেত্রেও এর ব্যবহারের চল বেড়েছে বই কমেনি। অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে রান্না করা, পুনরায় গরম করা এবং ঠান্ডা করা খাবারে উচ্চ মাত্রার অ্যালুমিনিয়াম পাওয়া গেছে। অ্যালুমিনিয়ামের উচ্চ মাত্রা যা শরীরে জমা হয় তা হাইপারক্যালসেমিয়া (রক্তে বেশি ক্যালসিয়াম) সৃষ্টি করে। হাড়ের খনিজ ঘনত্বকে দুর্বল করে এবং তাই পরবর্তী জীবনে অস্টিওপোরোসিস সৃষ্টি করে।

যাইহোক, অ্যালুমিনিয়াম ফয়েল গরম খাবার রাখার অভ্যাস বন্ধ করুন। এতে ঠান্ডা খাবার মুড়ে রাখা নিরাপদ পাওয়া গেছে কারণ অ্যালুমিনিয়াম বের হয় না। গরম খাবার রান্না ও সঞ্চয় করার বিকল্প হিসেবে যথাক্রমে পার্চমেন্ট পেপার বা মোমের কাগজ ব্যবহার করতে পারেন।

৫. রান্না করার বিশেষ কয়েকটা ভালো অভ্যাসঃ

  • সবজি ভাপে এবং মাঝে মাঝে নাড়াচাড়া করে ভাজা উচিত।
  • মাংস, মাছ এবং মুরগি বেক করা উচিত, গ্রিল করা উচিত এবং মাঝে মাঝে সেদ্ধ করা উচিত।
  • গোটা শস্য খাওয়ার অভ্যাস করুন।
  • মিহি আটা এড়িয়ে চলুন এতে কোন পুষ্টি থাকে না।
  • চিনি এবং উচ্চ প্রক্রিয়াকৃত পরিশোধিত কার্বোহাইড্রেট এড়িয়ে চলুন। এগুলি হল খালি খাবার যা পুষ্টিতে কম এবং উচ্চ ক্যালোরি বেশি।
  • অতিরিক্ত রান্না করা মাংস এবং শাকসবজি তাপকে অক্সিডাইজ করে এবং ধ্বংস করতে পারে – বি গ্রুপ, সি এবং ই এর মতো সংবেদনশীল ভিটামিন। সেদ্ধ করা শাকসবজি জলে দ্রবণীয় বি গ্রুপ এবং সি এবং সেইসাথে অনেক খনিজ পদার্থ বের করে দেয়। তাই স্টিম করুন এসব আগে তারপর রান্না করুন।
  • মাইক্রোওয়েভিং ভিটামিন বি৬ নষ্ট করতে পারে। এর ব্যবহার কমান।
  • খাবার বেশি করে ভাজা বন্ধ করুন। এটি অত্যন্ত বিষাক্ত পণ্য তৈরি করে যা শরীরকে ধ্বংস করে।
  • সেরা রান্নার তেল হল রাইসব্রান, চীনাবাদাম এবং জলপাই তেল।
  • লবণ ব্যবহার যতটা সম্ভব সীমিত করা আবশ্যক।
  • গোলমরিচের মতো মশলা ও তুলসী, সেলারি, পার্সলে এবং ওরেগানোর মতো ভেষজগুলি বেশি করে রান্নায় ব্যবহারের অভ্যাস করুন।
  • মটরশুটি অবশ্যই অঙ্কুরিত করে রান্না করা উচিত।
Article Tags:
Article Categories:
Food-kitchen-insights

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *