অনেকেই সকালের জলখাবারে রুটি বা টোস্টের সাথে পিনাট বাটার খেয়ে থাকেন। রেগুলার বা দুধ থেকে তৈরি বাটারের চাইতে চিনাবাদাম থেকে তৈরি বাটারের পুষ্টিগুণ অনেক বেশী। পিনাট বাটারে তুলনামূলক ভাবে বেশী প্রোটিন ও কম ফ্যাট থাকে। বাজারের পিনাট বাটার দামে একটু চড়া, তাই সাধ্যে কুলোয় না সবসময়। কিন্তু একটু কষ্ট করে যদি ঘরেই পিনাট বাটার বানিয়ে ফেলতে পারেন, তাহলে সবসময় খেতে পারবেন। আর বাদাম যেহেতু সারাবছরই বাজারে পাওয়া যায়, তাই সারাবছর পিনাট বাটার থাকবে আপনার সাধ্যের মধ্যে। অল্প কিছু উপকরণ দিয়ে কিভাবে ঘরে পিনাট বাটার বানাবেন তা জানতে পড়ে ফেলুন এই লেখাটি।
ক. পিনাট বাটার বানাতে কি কি লাগবেঃ
- পিনাট বাটার বা চিনাবাদাম – ৫০০ গ্রাম বা ২ কাপ
- সি সল্ট – ২ চা চামচ অথবা স্বাদ মতো
- মধু বা চিনি – ১ থেকে ২ টেবিল চামচ (স্বাদের জন্য)
- পিনাট অয়েল বা ভেজিটেবল অয়েল – ২-৩ চা চামচ (অপশনাল)
খ. ঘরে পিনাট বাটার বানানোর পদ্ধতিঃ
স্টেপ ১
প্রথমে চিনাবাদামের খোসা ছাড়িয়ে ভালো করে ঝেড়ে ফেলুন। শক্ত খোসা ছাড়ানোর পরে বাদামের গায়ে যে লাল রঙের পাতলা খোসা থাকে তাতে অনেক পুষ্টি থাকে৷ আপনি চাইলে ঐ পাতলা খোসাসহ বাটার বানাতে পারেন। অথবা সব খোসা ফেলেও বানাতে পারেন।
স্টেপ ২
এবারে বাদামগুলো রোস্ট করে নিন। ৩৫০° ফারেনহাইট (১৭৫° সেলসিয়াস) তাপমাত্রায় ওভেন প্রি-হিট করে নিন। কিনারা উঁচু আছে এমন একটি বেকিং প্যানে বাদামগুলো সমান করে বিছিয়ে দিন। ওভেনে ঢুকিয়ে ১৫-২০ মিনিট টোস্ট করুন। মাঝে প্রতি ৫ মিনিট অন্তর অন্তর বাদাম নেড়ে দেবেন। বাদাম যখন গোল্ডেন ব্রাউন হয়ে আসবে তখন বের করে ঠান্ডা হতে দিন। যদি চিনাবাদাম আগে থেকেই রোস্ট করা থাকে তাহলে আর নতুন করে রোস্ট করতে হবে না। চাইলে গ্যাসে প্যান বা চাটু গরম করেও রোস্ট করে নিতে পারেন গোল্ডেন ব্রাউন হওয়া পর্যন্ত।
স্টেপ ৩
রোস্টেড বাদামগুলো ঠান্ডা হতে দিন। এরপরে তা ফুড প্রসেসরে ঢেলে দিন। যদি হালকা গরম থাকতে ফুড প্রসেসরে দেন তাহলে ব্লেন্ডিং তাড়াতাড়ি হবে। ফুড প্রসেসরের জারে অবশ্যই বাদামের পরিমাণের দ্বিগুণ ধারণ ক্ষমতা থাকতে হবে। অর্থাৎ ২ কাপ বাদামের জন্য ৪ কাপ জিনিস ধরে এমন জারের ফুড প্রসেসর নিতে হবে।
স্টেপ ৪
ফুড প্রসেসর চালু করে দিন। ৮-১০ মিনিট লাগবে বাটার তৈরি হতে। প্রতি ৩০ সেকেন্ড বা ১ মিনিট পর পর মেশিন বন্ধ করে চামচ বা স্প্যাটুলা দিয়ে বাদাম এক জায়গায় করে দেবেন। প্রথমে বাদাম ছোট ছোট কণায় ভেঙে টুকরো হয়ে যাবে, এরপরে আঠালো, এবং সবশেষে তরল বাটারে পরিণত হবে। যদি ক্রাঞ্চি পিনাট বাটার চান, তাহলে তিন ভাগের এক ভাগ বাদাম ফুড প্রসেসরে দিবেন। সেগুলো যখন প্রথম অবস্থায় ছোট কণায় ভাঙা হবে তখন তুলে আলাদা করে রাখবেন। পরে বাকি বাদামের বাটার হয়ে গেলে তুলে রাখা বাদাম মিশিয়ে দেবেন। আর যদি পুরোটাই লিকুইড চান তাহলে একবারে প্রসেস করতে হবে।
স্টেপ ৫
বাটার যখন শেষ পর্যায়ে অর্থাৎ পুরোপুরি লিকুইড হয়ে আসবে তখন এতে সি সল্ট এবং মধু মিশিয়ে দিন। যদি মধুর পরিবর্তে চিনি দেন তাহলেও চলবে। কিন্তু যদি মধু দিতে চান, তাহলে খেয়াল রাখবেন মধুটা যেন ফ্রেশ এবং লিকুইড হয়। ক্রিস্টালাইজড, ফ্রোজেন, ক্রিমড, কিংবা বাসি মধু ব্যবহার করবেন না। আর মিষ্টির চাহিদা অনুযায়ী মধু বা চিনির পরিমাণ কম-বেশী করতে পারেন। বাটারে তেল মেশাতে পারেন যদি বাটার একটু বেশী লিকুইড খেতে চান।
স্টেপ ৬
একটি এয়ারটাইট কন্টেইনারে পিনাট বাটার ভরে ফ্রিজে রেখে দিন। সঠিকভাবে সংরক্ষণ করলে ফ্রিজে ৩-৪ মাস পর্যন্ত ভালো থাকবে পিনাট বাটার। আর যদি রুম টেম্পারেচারে স্টোর করতে চান তাহলে ঠান্ডা ও শুষ্ক স্থানে স্টোর করুন। আর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব খেয়ে ফেলার চেষ্টা করবেন।