যখন রান্নার কথা আসে, তখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল মশলা। কারণ মসলার নির্বাচন ঠিক থাকলে খাবারও হবে আরও সুস্বাদু এবং আপনি খেতেও মজা পাবেন গরমে। গরমকালে আমাদের খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন হতে থাকে। বাইরের প্রখর রোদে, আমরা এমন খাবার চাই যা মনকে আরাম দেয় এবং পেট ঠান্ডা করে। গরম থেকে নিজেকে রক্ষা করতে চাইলে কোন মসলা খাওয়া যেতে পারে তা জেনে রাখা খুবই জরুরি। তাহলে চলুন জেনে নেওয়া যাক কি কি সেই মসলা যা গরমেও খাবারের স্বাদ বাড়াতে সাহায্য করবে।
ক. গরমকালে খাবারের স্বাদ বাড়িয়ে দেবে এই ৮টি মসলাঃ
- সবুজ এলাচ
- মৌরি
- ধানিয়া গুঁড়ো
- ভাজা জিরা গুঁড়ো
- কালো লবণ
- ধানিয়া লবণ
- চাট মসলা
- পুদিনা গুঁড়ো
১. সবুজ এলাচঃ
সবুজ এলাচ সাধারণত খাবারের স্বাদ বাড়াতে খাওয়া হয়, কিন্তু শুধু তাই নয় সবুজ এলাচ আপনাকে গরম থেকে দূরে রাখতেও সাহায্য করে। সবুজ এলাচের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম এবং অন্যান্য সব পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায়। একই সময়ে, এটি প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম। গরমকালে খাবারে এলাচের ব্যবহার স্বাদ বাড়ানোর সাথে সাথে শরীরকেও ঠাণ্ডা রাখতে সাহায্য করে।
২. মৌরিঃ
মৌরি প্রায়শই মাউথ ফ্রেশনার হিসাবে খাওয়া হয়, তবে এটি খেলে শরীরে অনেক স্বাস্থ্য উপকার পাওয়া যায়। মৌরি খেলে শরীর অনেকক্ষণ ঠাণ্ডা থাকে, যেখানে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি থাকে। তাই, আপনি যদি শরীরকে সতেজ রাখতে চান এবং গ্রীষ্মের মৌসুমে শীতল অনুভব করতে চান, তাহলে প্রতিদিনের খাবারের মসলায় মৌরি অন্তর্ভুক্ত করতে পারেন। মৌরি গুঁড়ো করে রান্নায় দিলে রান্নার স্বাদও কিন্তু বেড়ে যায়।
৩. ধানিয়া গুঁড়োঃ
ধনেপাতা খাওয়া সাধারণত খাবারের স্বাদ বাড়ায়, ধনিয়ার প্রভাব খুব ঠান্ডা, আপনি যদি প্রতিদিন এটি খান তবে এটি শরীরে এবং পেটে শীতলতার অনুভূতি দেয়। পাশাপাশি ধানিয়া গুঁড়ো রান্নায় গরমকালে বেশি ব্যবহার করুন অন্য মসলার তুলনায়, দেখবেন মুখের টেস্ট বেড়ে যাচ্ছে। খাবারে স্বাদ লাগছে বেশি।
৪. ভাজা জিরা গুঁড়োঃ
জিরা আপনার পরিপাকতন্ত্রের মসৃণ কার্যকারিতায় সাহায্য করে। গ্রীষ্মের দিনে দইয়ের সাথে, বাটার মিল্কের স্বাদ বাড়াতে বা রাইতার ব্যবহার করতে জিরা গুঁড়ো অবশ্যই প্রয়োজন। তাই আপনি এটি বাড়িতে প্রস্তুত করুন এবং এটি রাখুন। প্রথমে প্যান বা তাওয়া ভালো করে গরম হতে দিন। এর পর তাতে জিরা দিন। একটানা নাড়তে নাড়তে ভাজুন ৩ মিনিট। মনে রাখবেন জিরা কালচে যেন না হয়। এরপর একটি প্লেটে ঠান্ডা করে নিন। তারপর এটা গুঁড়ো করে নিন। যেকোনো রান্নায় যোগ করুন স্বাদ বাড়াতে।
৫. কালো লবণঃ
পাচনতন্ত্র নিরাময় করার পাশাপাশি, কালো লবণ অম্বল কমাতেও সহায়ক। গরমকালে অনেকের এই অম্বলের সমস্যা বেড়ে যায়। তাই এটি বিভিন্ন খাবারে ব্যবহার করতে পারেন। বাটার মিল্ক ও রাইতার জন্য কালো লবণও ব্যবহার করতে পারেন। অন্যদিকে আলু তরকারিতেও কালো লবণ ব্যবহার করা যেতে পারে। স্বাদ বাড়ে অম্বল কমে।
৬. ধানিয়া লবণঃ
গরমকালে রাইতা বা দই নয়, অনেক চাইনিজ খাবার তৈরিতেও ধানিয়া লবণ ব্যবহার করতে পারেন। এটি তৈরি করতে আপনার প্রয়োজন তাজা সবুজ ধনেপাতা, ২ চিমটি হিং, ২ চা চামচ জিরা, ১ বাটি লবণ, ২ থেকে ৩টি সবুজ লঙ্কা এবং সামান্য আমচুর।
প্রথমে জিরা ও হিং ভেজে নিন। এবার প্রথমে মিক্সারে কাঁচা লঙ্কা ও ধনেপাতা পিষে নিন, পিষতে সমস্যা হলে ২ চা চামচ জল দিয়ে দিন। তারপর তাতে সামান্য লবণ দিয়ে মিশিয়ে নিন। এর পর বের করে শুকিয়ে নিন। ধানিয়া লবণ রেডি। যেকোনো জলখাবারে এটি ব্যবহার করুন।
৭. চাট মসলাঃ
চাট মসলা শুধু খাবার তৈরিই নয়, খাবারের স্বাদ বাড়াতেও ব্যবহার করা যেতে পারে। অঙ্কুরিত ছোলার উপর ছিটিয়ে খেতে পারেন। গ্রীষ্মকালে পাওয়া তরমুজ, পেঁপে ইত্যাদি ফলের ওপর ছিটিয়ে দিলে এসব ফলের স্বাদ দ্বিগুণ হয়। আপনি ফলের চাট তৈরি করতে চাট মসলাও ব্যবহার করতে পারেন।
৮. পুদিনা গুঁড়োঃ
গ্রীষ্মের মৌসুমে পুদিনা সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয়। কিন্তু এটি বেশ কয়েক দিন ধরে রাখা কঠিন, তাই আপনি পুদিনা পাতা শুকিয়ে পিষে কয়েক দিন ব্যবহার করতে পারেন। এজন্য পুদিনা পাতা ভালো করে শুকিয়ে মিক্সারে পিষে নিন। তারপর তা শুকিয়ে গুঁড়ো বানিয়ে নিন। খাবারে এক চামচ ব্যবহার করুন। খাবারের স্বাদ হবে দারুন।
