দই খাওয়া নিয়ে নানা রকমের বিধিনিষেধ দেখতে পাবেন। কেউ বলে খালি পেটে দই খেতে নেই, আবার কারো দাবী রাতে দই খেতে নেই। অনেক রকম ধারণা রয়েছে। এর মধ্যে কিছু সত্যি মানার মত নয়। আজ এসব নিয়েই লেখা। আসল সত্যিটা কি তা প্রমাণসহ জেনে রাখা খুবই দরকার। চলুন বেশি কথা না বাড়িয়ে আসল বিষয় নিয়ে কথা বলা যাক। বহু যুগ ধরে চলে আসা দই নিয়ে ভুল ধারণাগুলো কি কি, কেন আর কোনটা বাস্তব আর কোনটা অবাস্তব।
১. দই ও লবণঃ
একটি বিশ্বাস আছে যে দই এবং লবণ একসাথে খেলে ত্বকের রোগ হতে পারে। ব্রণ বা ব্রণর মতো বিদ্যমান রোগগুলিকে বাড়িয়ে তুলতে পারে। এই ভেবে অনেকে দই ও লবণ একসাথে খায় না। কিন্তু রান্নায় দই যোগ করলে, লবণ থাকে তাতে। তাহলে তো যারা রান্নায় দই দেয় তাহলে লবণ ছাড়া বানায়! এমন তো নয়। ভাবার বিষয় কিন্তু এটা।
২. দই এবং মাছঃ
অনেকে দই এবং মাছ একসাথে খাওয়া এড়িয়ে চলেন কারণ এটি পেটে ব্যথা বা অন্যান্য হজমের সমস্যা সৃষ্টি করে বলে বিশ্বাস করা হয়। দই ইলিশ, দই কাতলা বলে বিশেষ পদ আছে। আসলে যাদের পেটের সমস্যা তাদের অনেক খাবার থেকে সমস্যা হয়। তাই বলে দই আর মাছের একসাথে ব্যবহারের উপর কোন সমস্যা নেই।
৩. দই এবং দুধঃ
কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে দই এবং দুধ একসাথে খেলে কাশি, সর্দি বা শ্লেষ্মাজনিত সমস্যা হতে পারে। এটা অনেক সময় হয়। যা ভুল নয়। দুধ আমরা গরম গরম খাই। দই খাই ঠাণ্ডা। একটি বিশ্বাস আছে যে গরম বা উষ্ণ দই খাওয়ার ফলে ত্বকের সমস্যা বা ব্রণ হতে পারে। তাই একসাথে যদি এটা খাওয়া হয় গলা খারাপ হওয়া স্বাভাবিক। তাই একসাথে না খাওয়াই ভালো।
৪. দই এবং দই ভাতঃ
একটি মিথ আছে যে দই ভাতের সাথে আলাদা করে দই খেলে গ্যাস বা ফোলাভাব হতে পারে। গরমকালে দই ভাতের চেয়ের শান্তি আর কিছুতে নেই। অনেক যুগ ধরে বিধবারা এটা খেয়েছেন। এটা নিয়ে আমিও সঠিক কিছু জানি না। কারোর জানা থাকলে দয়া করে জানাবেন।
৫. দই এবং কলাঃ
কিছু লোক দই এবং কলা একসাথে খাওয়া এড়িয়ে চলে, বিশ্বাস করে যে এটি কাশি বা গলা সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে। যেটা হওয়া স্বাভাবিক। এতে তেমন কোন ভ্রান্ত ধারণা নেই। কিন্তু সবার ক্ষেত্রে এটা হয় না।
৭. দই এবং মুলাঃ
কিছু অঞ্চলে, লোকেরা দই এবং মূলা একসাথে খাওয়া এড়ায়, বিশ্বাস করে যে এটি জয়েন্টে ব্যথা বা বাত হতে পারে। আবার কিছু অঞ্চলে লোক একসাথে খায়। তাই এটা ব্যাক্তি থেকে ব্যাক্তি নির্ভর করে। দই ও মুলার কোন দোষ নেই।
৮. পূর্ণিমা ও দইঃ
কেউ কেউ বিশ্বাস করেন যে পূর্ণিমার রাতে দই খাওয়া উচিত নয় কারণ এটি বদহজম বা অন্যান্য পেট সম্পর্কিত সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। এটা সঠিক ভাবে কিছু বলা যায় না কেন!
এই কাহিনীগুলির অনেক বৈজ্ঞানিক প্রমাণের অভাব রয়েছে। তবে এগুলি ভারতীয় সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের মধ্যে গভীর ভাবে জড়িত।