ইস্কন মন্দিরের প্রসাদম অর্থাৎ ভোগের খিচুড়ি যে একবার খেয়েছে সে সারাজীবন মনে রেখে দেবে সেই স্বাদ। আপনি নিশ্চয়ই ইস্কন মন্দিরে প্রসাদ হিসেবে খিচুড়ি খেয়েছেন। এই খিচুড়ির স্বাদ খুবই সুস্বাদু। এটি একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি প্রস্তুত করার অনেক উপায় রয়েছে, যা লোকেরা তাদের পছন্দ অনুসারে তৈরি করে। তবে, আপনি যদি মন্দিরে তৈরি করা হয় এমন ঐতিহ্যবাহী উপায়ে খিচুড়ি তৈরি করতে চান তবে আজকে দেওয়া এই রেসিপি দেখুন। হবহু মন্দিরের প্রসাদমের মত খেতে। অথেনটিক প্রসাদম যা কিনা ইস্কনের খিচুড়ি, তা বানানোর স্টেপ বাই স্টেপ পদ্ধতি লিখছি।
১. ইস্কনের খিচুড়ি প্রসাদমঃ
আপনি যদি মন্দিরে তৈরি করা হয় এমন ঐতিহ্যবাহী উপায়ে খিচুড়ি তৈরি করতে চান তবে আজকে দেওয়া এই রেসিপি দেখুন। হবহু মন্দিরের প্রসাদমের মত খেতে।
উপকরণঃ
- চাল ১/২ কাপ
- মুগ ডাল ১/২ কাপ
- সরষের তেল ২৫ গ্রাম
- পাঁচফোড়ন বড় ১ চা চামচ
- হলুদ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ
- তেজপাতা ২ টা
- শুকনো লঙ্কা গোটা ৩ টা
- আলু ১০০ গ্রাম
- কুমড়ো ১০০ গ্রাম
- আদা ১ চামচ ঘষে নেওয়া
- লবণ স্বাদ অনুযায়ী
- ঘি স্বাদ অনুযায়ী
পদ্ধতিঃ
প্রথমে চাল ও ডাল আলাদা করে ভালো ভাবে ধুয়ে ২০ মিনিট ভিজিয়ে রাখা। তারপর একটি মাটির পাত্র, যদি না থাকে তাহলে কড়া বা ডেকচিতে সরষের তেল দিয়ে ভালো করে গরম কড়া। তেল গরম হলে পাঁচফোড়ন, তেজপাতা ও শুকনো লঙ্কা দিতে হবে। এক মিনিট ভেজে এতে আদা দেবেন। তারপর হালকা কষিয়ে এতে ডাল যোগ করবেন। ডাল ভালো ভাবে মসলার সাথে মিশিয়ে এতে দেবেন হলুদ গুঁড়ো।
ডাল ভালো করে কষিয়ে নেওয়া হলে জল দেবেন প্রয়োজন মত। ঢাকনা দিয়ে ডাল অর্ধেকের বেশি সেদ্ধ না হওয়া পর্যন্ত রান্না করবেন। ডাল সেদ্ধ হলে চাল দেবেন। সাথে দেবেন আলু ও কুমড়ো ডুমো ডুমো করে কেটে। চাইলে পালং শাক ও বাঁধাকপিও যোগ করতে পারেন এর সাথে। দিয়ে দেবেন স্বাদ অনুযায়ী লবণ।
ঢাকনা দিয়ে ঢেকে সেদ্ধ হতে দেবেন। তারপর আঁচ কমিয়ে ১০ মিনিট রান্না করবেন। আর কিছু করতে হবে না। ভগবান কৃষ্ণের প্রসাদম তৈরি। উপর থেকে সামান্য ঘি ছড়িয়ে দেবেন। ভগবানকে নিবেদন করলে একটা তুলসিপাতা ভোগের উপরে দিয়ে দেবেন। একেবারে ইস্কন মন্দিরের অথেনটিক খিচুড়ি প্রস্তুত। এভাবেই ইস্কন মন্দিরের খিচড়ি ঘরেই তৈরি করা যায় সনাতন পদ্ধতিতে।
ঐতিহ্যবাহী উপায়ে ইস্কন মন্দিরের খিচুড়ি রেসিপি লেখার পাশাপাশি আরও একটি পদ্ধতি লিখছি। মন্দিরের রাঁধুনিদের নানা রকম ভাবে বানানো ভোগের খিচুড়ির দেখে এটি চাইলে এভাবেও বানাতে পারেন।
২. ইস্কন মন্দিরের খিচুড়ি ঘরোয়া স্টাইলেঃ
ইস্কনের খিচুড়ি প্রসাদম একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার হিসাবে বিবেচিত হয়। এটি প্রস্তুত করার অনেক উপায় রয়েছে, যা লোকেরা তাদের পছন্দ অনুসারে তৈরি করে।
উপকরণঃ
- চাল ১/২ কাপ
- ছানার ডাল ১/৪ কাপ
- মুগ ডাল ১/৪ কাপ
- তেজপাতা ২ টি
- জল প্রয়োজন অনুযায়ী
- লবণ স্বাদ অনুযায়ী
- হলুদ গুঁড়ো ১/২ চা চামচ
- গাজর ১/২ কাপ
- মটরশুটি ১/২ কাপ
- ফুলকপি ১/২ কাপ
- আলু ১/২ কাপ
- লাল লঙ্কার গুঁড়ো ১ চা চামচ
- ধনে গুঁড়ো ১ চা চামচ
- গরম মসলা ১ চা চামচ
- সরিষা বীজ ১/২ চা চামচ
- মেথি বীজ ১/২ চা চামচ
- জিরা ১/২ চা চামচ
- কালজিরের বীজ ১/২ চা চামচ
- মৌরি ১/২ চা চামচ
- ঘি ২ চামচ
- আস্ত শুকনো লঙ্কা ২টি
- হিং ১/২ চা চামচ
পদ্ধতিঃ
মাটির পাত্র না থাকলে প্রেসার কুকারেও তৈরি করা যায়। খিচড়ি তৈরি করতে ডাল ও চাল এক ঘণ্টা ভিজিয়ে রাখুন। এজন্য পাত্রে অন্তত ৬ কাপ জল গরম করতে রাখুন। জল কম মনে হলে এর পরিমাণ বাড়াতে পারেন। এবার এতে স্বাদ অনুযায়ী লবণ ও হলুদ মিশিয়ে নিন।
২ থেকে ৩ মিনিট পর এতে ভেজানো ডাল মেশান। একটু রান্না হতে দিন, মাঝে মাঝে নাড়তে থাকুন। ছানার ডাল সামান্য সেদ্ধ হয়ে এলে এতে মুগ ডাল মিশিয়ে নিন। তিন থেকে চার মিনিট পর চাল মেশান। এরপর এতে তেজপাতা মিশিয়ে নিন। ৫ থেকে ৬ মিনিট রান্না করার পর এর মধ্যে সবজি মিশিয়ে ভালো করে নাড়ুন।
এবার লাল লঙ্কার গুঁড়ো, ধনে গুঁড়ো এবং গরম মসলা দিয়ে ভালো করে মেশান। পাত্রটি ঢেকে ১০ মিনিট রান্না হতে দিন। এই সময়ে মাঝে মাঝে নাড়তে ভুলবেন না। খিচুড়ি সিদ্ধ হয়ে গেলে গ্যাস বন্ধ করে দিন। এবার প্যানটিকে দ্বিতীয় আঁচে রাখুন এবং ঘি দিন। ঘি গলে গেলে সরিষা, মেথি, কালোজিরে, মৌরি এবং জিরা দিন। এক মিনিট পর আস্ত লাল লঙ্কা ও হিং দিয়ে দিন। চামচ দিয়ে নেড়ে ভালো করে ভাজুন। এবার খিচুড়িতে মিশিয়ে সেটা ঢেকে দিন। তৈরি হয়ে যাবে খিচুড়ি।
ব্যক্তিগত আপডেট, রেসিপি, টিপস এবং আরও অনেক কিছুর জন্য আমার Whatsapp Channel অনুসরণ করুন…